সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন
আবুল কাশেম- সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ
মেয়ের জন্মদিনের রাতে ৪ঠা জুন যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে স্বামীর হাতে খুন হওয়া এক সন্তানের জননী সাইমা তাসনিম শাপলা(২৩) দেশের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন।
সোমবার ১৩ই জুন বিকেলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে শাপলার মরদেহ সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের হাজরাই গ্রামস্থ পিত্রায়লে এসে পৌঁঁছে। আর সন্ধ্যার পর মরহুমার জানাযার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় সাইমা তাসনিম শাপলার মরদেহ।
নিহত শাপলা উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের হাজরাই গ্রামের মৃত হাজী মখদ্দুছ আলীর একমাত্র কন্যা ছিলেন। সাংসারিক জীবনে স্বামীর হাতে খুন হওয়া শাপলা ছিলেন ৫ বছর বয়সী শাহিদা বেগম ফারিহার জননী। মরহুমার জানাযার নামাজে ইমামতি করেন হাজরাই জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব ফারুক মাহদি এবং দোয়া পরিচালনা করেন সংপুর দারুল হাদিস কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা জামাল উদ্দিন।
শাপলার জানাযার নামাজে উপস্থিত ছিলেন- লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ এনামুল হক এনাম মেম্বার, ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার লাল মিয়া লালু, সাবেক মেম্বার রফিক আহমদ, মোঃ নূরুজ্জামান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহনুর হোসাইন, লামাকাজী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল রব, প্রচার সম্পাদক মোক্তার আলী, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ফয়ছল আহমদ, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি শহিদ খান আতা, সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন প্রমুখসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিবর্গ।
এদিকে, শাপলার লাশ তার পিত্রালয়ে পৌঁছানোর পর সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। নিহতের আত্নয়ী-স্বজনদের কান্নায় ভারী হয় আশপাশের পরিবেশ। একমাত্র সন্তানকে চিরতরে হারিয়ে চিৎকার করে কান্না করতে গিয়ে বারবার মুর্চ্ছা যাচ্ছিলেন শাপলার মা জাহানারা বেগম।
স্থানীয় সাংবাদিকদেরকে স্বামীর হাতে খুন হওয়া শাপলার মা জাহানারা বেগম জানান- গত ৪ঠা জুন শনিবার শাপলার একমাত্র মেয়ে শাহিদা বেগম ফারিহার জন্মদিনের রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় শাপলাকে গলাটিপে খুন করে তার পাষন্ড স্বামী আবদাল হোসেন। শাপলা খুন হওয়ার পর সেখানকার পুলিশ আবদালকে গ্রেপ্তার করে এবং আবদালও খুনের দায় স্বীকার করে। ফারিহার জন্মদিন পালন করতে সেদিন আবদাল শাপলার নিউজার্সির বাসায় গিয়েছিল।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাহানারা বেগম আরও জানান- ‘আমাদের প্রতিবেশী সমুজ আলীর পুত্র আবদাল হোসেনের সাথে ২০১৫ইং সালের ২৮শে জানুয়ারী পারিবারিকভাবে শাপলার বিয়ে হয়। আর ২০১৭ইং সালে শাপলা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায়। কিন্তু শুরু থেকেই আমার মেয়েকে মেনে নিতে পারেননি আবদালের মা মিনারা বেগম ও বড় ভাই আক্তার।
তারা সেখানে আমার মেয়েকে অবিরত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো। বাংলাদেশ থেকে তাদেরকে ইন্ধন যোগাতো একই গ্রামের আঞ্জব আলীর পুত্র সুজন। খুন করার কিছুদিন পূর্বেও একবার শাপলাকে মারপিট করেছে আবদাল। আমার মেয়ে তার (স্বামীর) যন্ত্রণায় নিউজার্সি শহরে মেয়েকে নিয়ে একা থাকতো। আর আবদাল থাকতো তার মা-বাবার সাথে মিশিনগান শহরে।
আমার মেয়ের কাছে থাকা সব টাকা-পয়সা আবদাল কেড়ে নিয়েছিল। ফোনে কথা হলে শাপলা কান্নাকাটি করে আমাকে বলতো, আবদাল পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে পড়েছে। মেয়েদের সাথে ধারণ করা তার বিভিন্ন ধরণের ভিডিও শাপলাকে দেখিয়েই ফোন থেকে মুছে ফেলতো আবদাল। মেয়ের হত্যাকারী ও হত্যাকান্ডের পেছনের ইন্ধনদাতাদের শাস্তির জন্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও পররাস্ট্রমন্ত্রীর কাছে আকুল দাবি জানান শাপলার মা।
অনলাইন ভিত্তিক 71sangbad24.com গণমাধ্যমটি
বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশনে নিবন্ধিত, (আই ডি নং-364)।
বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
আগ্রহীগণ সিভি পাঠাতে ই-মেইল করুনঃ info71sangbad24.com@gmail.com